বৃহস্পতিবার, ১৯ Jun ২০২৫, ১০:৪৪ অপরাহ্ন
মোঃ মাইন উদ্দিন, কুলিয়ারচর প্রতিনিধি:
সরকারি চাকুরী মানেই সরকার যখন যেখানে দায়িত্ব পালনের আদেশ প্রদান করে সেখানে আস্থার সহিত দায়িত্ব পালন করা এবং সেই অঞ্চলের মানুষদের সেবা দেওয়া। সরকারি এই নিয়মের বাইরে নন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও। চাকুৃরী জীবনে তাদেরকে বিভিন্ন জেলা ও থানায় দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু যে মানুষটির মধ্যে মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকে সে মানুষটাকেই মানুষ সারাজীবন মনে রাখে। তার স্থানে অন্য কেউ আসলে সেই অফিসার যদি হয় পূর্বের অফিসারের মত সৎ, কর্মঠ ও জনবান্ধন তাহলে নতুন অফিসারের গুনকীর্তন করতেও কেউ ভুল করে না। আর এমনই একজন সৎ, নির্ভীক, কর্মঠ, জনবান্ধন ও নিরহংকারী মনের অধিকারী হলেন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা। তিনি গত ২০২১ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর কুলিয়ারচর থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে থানার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মাদক নির্মূল, চুরি, ডাকাতি, জমিসংক্রান্ত বিরোধ, বাল্যবিবাহ বন্ধসহ সামাজিক ও মানবিক কাজে স্বতঃফুর্ত ভাবে অংশগ্রহণের জন্য কুলিয়ারবাসীর কাছে ইতোমধ্যে জনবান্ধন ওসি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। কুলিয়ারচরে যোগদানের আগে তিনি নরসিংদীর পলাশ থানায় ওসি তদন্ত’র দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় করোনাকালে তিনি খাদ্য সামগ্রী, মাস্ক বিতরণ, সচেতনতা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে ব্যাপক দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছেন। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, করোনা মহামারীর সময় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে খুবই গর্ববোধ করছি। আরো গর্ববোধ করছি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের, যারা করোনা মহামারীর দুঃসময় মানুষের পাশে থেকে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি মনে করেন, জনগনের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম। পুলিশ মানে জনগনের বন্ধু, জনগণের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা, পুলিশ মানে শত ভয়কে জয় করে মানুষের সেবা করা, পুলিশ মানে নিজে রাত জেগে ঘুমকে বিসর্জন দিয়ে অন্যকে ঘুমের স্বাদ দেওয়া, পুলিশ মানে ব্যথিত হৃদয়ের মানুষের মাঝে মিশে যাওয়া অংশীদার, পুলিশ মানে জনগনের যান মালের নিরাপত্তার দাবিদার, পুলিশ মানে করোনাকালে ভয়ে রাস্তায় ফেলে যাওয়া মানুষের দাফন দাতা, পুলিশ মানে নিজে ঈদে বাড়ি না গিয়ে অন্যকে ঈদের আনন্দ দেওয়া, পুলিশ মানে দুঃসময়ে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌছে দেওয়া। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, তরুণ প্রজন্মের আদর্শ, সুযোগ্য উদ্যামী, ন্যয় পরোয়ান, মেধাবী, সৎ, সাহসী, কর্মঠ, দক্ষ, নিরহংকারী কর্তব্য পরায়ন ও আন্তরিক ব্যক্তিত্ব। যা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণই ছুটে বেড়াচ্ছেন কুলিয়ারচরের বিভিন্ন ইউনিয়ন, গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায়। কুড়াচ্ছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রসংসা। যেমন: শুক্রবার সাধারণত জুম্মার নামাজের আগে বয়ান করেন মসজিদের নির্ধারিত ইমাম। আর এটিই স্বাভাবিক এবং প্রচলিত নিয়ম। কিন্তু কুলিয়ারচরের বিভিন্ন গ্রামে ও পাড়া-মহল্লার মসজিদগুলোতে প্রতি শুক্রবার ওসি গোলাম মোস্তফাকে দেখা যায়। তিনি মসজিদে গিয়ে বয়ান করেন ইমামের মতোই। তবে তার বয়ানে উঠে আসে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে ধর্মীয় অবস্থান। আলোচনা করেন কোরআন-হাদিসের আলোকে। ভিন্নধর্মী এই পুলিশিং ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে কুলিয়ারচরে। উদ্দেশ্য তার একটাই, কার কি সমস্যা, খুঁজে বের করা। আর এজন্য জনবান্ধব ওসি হিসেবে কুলিয়ারচরবাসীর কাছে পেয়েছেন গ্রহণযোগ্যতা। জনবান্ধব ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোঃ আব্দুল আজিজ। মাইজবাগ ইউনিয়নের বিশাল বির্স্তীর্ণ সবুজ মাঠ, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ আর খালবিলে ভরপুর তারাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করে ছুটে চলা দুরন্ত সেই শিশুটি আজ কলিয়ারচর থানার জনবান্ধন অফিসার ইনচার্জ ওসি গোলাম মোস্তফা। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। চাকুরীজীবনের প্রথম যোগদান করেন ঢাকা ডিএমপিতে। এরপর নরসিংদীর পলাশ থানায় ওসি তদন্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেখান থেকে গত ২৯/৯/২০২১ ইং কুলিয়ারচর থানায় যোগদান করে অফিসার ইনচার্জ ওসি’র দায়িত্ব পেয়ে ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। মাত্র ১ বছর দায়িত্ব পালন করে তিনি যেমনি পেয়েছেন কুলিয়ারচরবাসীর প্রসংসা তেমনি পেয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ কতৃক তিন তিনবার জেলার শ্রেষ্ট ওসি হিসেবে সম্মাননা। জানা যায়, চাকুরীতে আসার আগে তিনি মাইলস্টোন কলেজের প্রবাষক ছিলেন।